নিজস্ব প্রতিবেদক, সিএসকন্ঠঃ-
আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়েছে এক বৃদ্ধ পিতার। পিতা-মাতার ভরণপোষন আইনে অভিযোগ এনে ফরিদপুরের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ৮০ বছরের এক বৃদ্ধ পিতা। বৃদ্ধের অভিযোগ- অভিযুক্তরা পরস্পর একদলভুক্ত, জুলুমবাজ, পরধনলোভী প্রকৃতির লোক। তিনি, একজন বয়ঃবৃদ্ধ মানুষ হওয়া সত্বেও তার দুই ছেলে তাকে পিতা হিসাবে সম্মান করে না। তাকে পিতা হিসাবে কোনরূপ ভরণপোষন দেয় না। অভিযুক্ত ছেলেরা তাকে মাঝে মধ্যেই তাদের নামে বৃদ্ধের স্বত্বদখলীয় জমি-জমা লিখে দেওয়ার জন্য তাকে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে চাপ দিতে থাকে। বৃদ্ধ জমি-জমা লিখে দিতে অস্বীকার করলে বৃদ্ধকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তবে, অভিযোগের সত্যতা নিয়ে রহস্য পাওয়া গেছে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি এপ্রিলের ১ তারিখে বৃদ্ধের বাড়ীতে সন্ধ্যা সাতটায় ঘটেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। অভিযোগকারী বৃদ্ধ হলেন- খাপুরা এলাকার প্রয়াত বাবর আলীর ছেলে চুন্নু শিকদার (৮০)।
অভিযুক্তরা হলেন- ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার হামরদী ইউনিয়নের খাপুরা এলাকার চুন্নু শিকদারের ছেলে ছলেমান শিকদার (৫৬), মামুন শিকদার (৪৮) ও ছলেমান শিকদারের ছেলে ফয়সাল শিকদার (৩১)।
আদালতে দায়েরকৃত অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়- মামলার দ্বিতীয় স্বাক্ষী লিটু মাতুব্বর। তিনি, এ ঘটনা জানেন না। সংবাদকর্মীদেরকে তিনি জানিয়েছেন- ঘটনার সময়ে অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। এ ঘটনার স্বাক্ষী দেওয়ার জন্য তিনি আদালতে না-ও যেতে পারেন।
অভিযোগকারী বৃদ্ধের বিষয়ে খোঁজ নিলে বেড়িয়ে আসে ভিন্ন তথ্য! একে একে চারটি বিয়ে করেছেন বৃদ্ধ চুন্নু শিকদার। সবশেষে তার স্ত্রী সুমি বেগমকে নিয়ে সংসার করছেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান- ব্যক্তি চুন্নু শিকদার খুব একটা ভালো মনের মানুষ নন। যে দল ক্ষমতায় থাকে তিনি সেদল করেন।
অভিযুক্তদের মধ্যে মামুন শিকদার জানান- আমার জীবনটাই শেষ করেছি বাবার জন্যে। আমি বিদেশে ছিলাম বেশ কয়েক বছর। আমার ক্রয় কৃত জমি উনার নামে দিয়েছি। আমার মা মারা যাওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই তিনি আরেকটা বিয়ে করেছেন। আমার পিতা পাঁচটি বিয়ে করেছেন। মূলত, আমরা চার ভাই এক বোন। আমরা তিন ভাই-বোন একত্রিত থাকলেও এক ভাই ও পিতার কারণে সম্প্রতি, আমার ছোট ভাই শিপন কোপ খেয়েছে।
আবেগাপ্লুত হয়ে মামুন শিকদার জানান- আমার বিদেশে থাকা উপার্জন সব কিছুই আমি আমার পিতাকে দিয়েছি। মামলার প্রথম স্বাক্ষী সুমি বেগম ও দ্বিতীয় স্বাক্ষী লিটু মাতুব্বর ঘটনার সময়ে উপস্থিত ছিলেন না বলেও জানান তিনি। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা সম্পূর্ণ ঘটনাটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। প্রত্যাশা করে মামুন বলেন- এ ঘটনাটি সঠিকভাবে তদন্ত করা হোক। এতে, সঠিক ও সত্য ঘটনা বেড়িয়ে আসবে।
এ বিষয়ে হামিরদী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোঃ খোকন মিয়া জানান- তিনি মুরুব্বি মানুষ। বেশি বয়স্ক মানুষতো আমিও শুনেছি তিনি একাধিক বিয়ে করেছেন। চুন্নু শিকদার ব্যক্তি হিসেবে কেমন? সংবাদকর্মীর এ প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান তিনি।