ক্রাইম সার্চ কণ্ঠ ডেস্ক:-
পঞ্চাশোর্ধ বৃদ্ধের দ্বারা ৩য় শ্রেণিতে পড়ুয়া ১০ বছরের এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের হরুপদিয়া গ্রামে এ চাঞ্চল্যকর ঘটনাটির খবর পাওয়া গেছে। একইসাথে, ঘটনাটি জানাজানি হলে গ্রামের কিছু অসাধু ব্যক্তিরা শালিসের নামে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন।
স্থানীয়রা জানান- সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে প্রতিবেশীর বাড়িতে দুধ সিন্নি রান্না শেষে শিশুটির সম্পর্কে দাদী হোন এমন একজন তার আর এক প্রতিবেশী দাদা দেলোয়ার মোল্লার ঘর থেকে প্লেট আনতে বলে। এ সময় শিশুটি প্লেট আনতে গেলে অভিযুক্ত দেলোয়ার মোল্লা (৬০) শিশুটিকে কৌশলে ঘরের ভিতর নিয়ে হাত, পা ও মুখ বেঁধে ধর্ষণ করে। পরে, এ ঘটনা যেন কাউকে না বলে সেজন্য দেলোয়ার মোল্লা শিশুটিকে হত্যার হুমকি দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
স্থানীয়রা আরও বলেন- বাড়িতে ফেরার পর শিশুটির চাচা ও চাচি শিশুটির শরীরজুড়ে কামড়ের দাগ ও পরণের কাপড় ভেজা দেখে শিশুটিকে জিজ্ঞাসা করলে শিশুটি ভয়ে ভয়ে সবকিছু তার চাচির কাছে বলে দেন।
এ ঘটনার পরের দিন, মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ধর্ষণের বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে প্রতিবেশী গ্রাম্য সালিশ পক্ষের সৈয়দ মোল্লা, আয়নাল মোল্লা, আবু কালাম, ইউসুফ মোল্লা, সবর মোল্লা, হায়দার মোল্লা আফজাল মোল্লা, পলাশ মোল্লা প্রমুখ, শালিসের মাধ্যমে দুই লক্ষ টাকা দিয়ে মিমাংসার জন্য ভুক্তভোগী পরিবারটিকে চাপ প্রয়োগ করে। ভুক্তভোগীরা তাদের প্রস্তাবে রাজি না হয়ে আইনের মাধ্যমে বিচার দাবী করলে, আয়নাল ও পলাশ শিশুটির পিতা ও চাচাকে গালিগালাজ করে ও হুমকি প্রদান করে।
এ বিষয়ে শিশুটির চাচা সবুর মোল্লা জানান, তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় পলাশ আমাকে গলা ধাক্কা দিয়ে সালিশ থেকে বের করে দেয়। এ সময় আমার বাবাকে নিয়ে গালি গালাজ করে। আর আয়নাল মোল্লা বলে তোরা মামলা করবি আর আমরা টাকা দিয়ে সব মিটায় নিবো। দেখি তোরা কত দুর যাইতে পারিস। তিনি, ধর্ষক দেলোয়ার মোল্লার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক এলাকাবাসী জানান, দেলোয়ার মোল্লা ডাকাতি মামলায় হাজত খেটে কিছুদিন আগে জেল থেকে ছাড়া পায়। ওর চরিত্রও ভালো না। বিভিন্ন অকাম কুকাম করার কারণে গ্রামবাসীরা অনেকবার ওরে গাছের সাথে বাইন্দা পিডাইছে। তারপরও ওর শরম অয় না। গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এইবার আপনারা ওর শাস্তির ব্যবস্থা করেন। নানা অপরাধ কইরা মেলা টাকা কামাইছে। সেই ট্যাহার (টাকা) গরমে দেলোয়ার আর ওর ভাইরা মাইনসে গো মানুষই মনে হরে না ।
অভিযুক্ত দেলোয়ার মোল্লার বাড়ি-ঘর তালাবদ্ধ থাকায় ও শালিসকারীরা বাড়িতে না থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আশরাফ হোসেন জানান- বুধবার বিকেলে ধর্ষণের ঘটনার একটি সংবাদ পাই। পরে, ঘটনাস্থলে রবিউলের বাড়িতে পৌছাই। ভিকটিম শিশু ও তার মা-বাবার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। এরপর, ভিকটিমকে মেডিকেল রিপোর্টের জন্য থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় রাতে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।