জাকির মুন্সি, নিজস্ব প্রতিবেদক:-
এক বেসরকারি কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্রবাসী বাবা ও আপন বড় চাচার বিরুদ্ধে। তিন মেয়েকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ভুক্তভোগী প্রবাসীর স্ত্রী। এঘটনায় ভুক্তভোগীর মেয়ে সামিয়া আক্তার বৃহস্পতিবার হত্যাচেষ্টার ঘটনা ও নিরাপত্তা হীনতার বিষয় উল্লেখ করে- পিতা শাহাবুদ্দিন, রিয়াদ যুবলীগের প্রধান উপদেষ্টা চাচা কাইয়ুম ফকির সহ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ভাঙ্গা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযুক্তরা হলেন- ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার তুজারপুর ইউনিয়নের কাফুরপুর এলাকার শাহাবুদ্দিন ফকির ও তার বড় ভাই কাইয়ুম ফকির। তারা সৌদি আরব প্রবাসী।
জানা যায়- গত ১২ এপ্রিল শনিবার রাত ৯টার দিকে সামিয়াকে জোর করে সাবান পানি খাওয়ানো হয়।
লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা যায়- তিন কন্যা সন্তান ও তার স্ত্রীকে না জানিয়ে ২০২২ সালে বিয়ে করেন শাহাবুদ্দিন। তিনি, পরকিয়া সম্পর্কের কারণে ঐ মহিলাকে বিয়ে করেছেন। এরপর অমানুষিক নির্যাতন নেমে আসে তাদের তিন বোন ও মায়ের উপর।
লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন- গত শনিবার আমাকে আমার পিতা, সৎ মা, চাচা ও ফুফুরা মিলে আমাকে জোর করে সাবান পানি (ডিটারজেন্ট পাওডার) খাইয়ে হত্যার চেষ্টা করে। অবস্থার অবনতী হওয়ায় উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্স থেকে ফমেকে (ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল) ভর্তি করানো হয়। এরপর, কিছুটা সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরলে পূনরায় নানান নির্যাতন শুরু করেন অভিযুক্তরা। তারপরেই তাদেরকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন সামিয়া।
নিজ মেয়েকে হত্যাচেষ্টা! অভিযুক্ত প্রবাসী বাবা
এ বিষয়ে সামিয়ার মা সালমা বেগম বলেন, আমার স্বামী শাহাবুদ্দিন ফকির প্রবাসে থাকাকালে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। সে গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। বিয়ের পর থেকেই আমার ও মেয়েদের উপর নির্যাতন বাড়তে থাকে। আমি বাবার বাড়ি বেড়াতে গেলে আমাদের বসবাসের ঘর ভেঙে ফেলে। আমাদেরকে বাড়ি ছাড়ার হুমকি দেন। এতে আমার বড় মেয়ে প্রতিবাদ করলে তাকে হত্যার চেষ্টা করেছেন অভিযুক্তরা।
অভিযুক্তদের মধ্য থেকে শাহাবুদ্দিন ফকির জানায়, আমি ২০২১ সালে আমার স্ত্রী সালমাকে একতরফা ভাবে তালাক দিয়ে আরেকটি মহিলাকে বিয়ে করি। মেয়েরা মাঝে মধ্যে তাদের মাকে সাথে নিয়ে বাড়িতে আসে। ঘটনার সময় আমরা উঠানে বসা ছিলাম, পরে চিৎকার শুনে গিয়ে দেখি সামিয়া মাটিতে পড়ে আছে। আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই কিন্তু আমি মেডিকেল পর্যন্ত যাইনি। মা-মেয়ের পরিকল্পনায় তাদেরকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানার এসআই (উপ-পরিদর্শক) আফজাল হোসেন জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে তদন্ত করতে গিয়েছিলাম। সামিয়ার ভাষ্যমতে, তাকে জোর করে পানিতে মেশানো কিছু খাওয়ানো হয়েছিল। অন্যদিকে, অভিযুক্তদের দাবি- সামিয়া নিজের ইচ্ছায় এমন কাজ করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে রহস্য উদঘাটন করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।